রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক : মহেশখালীতে মো. ফেরদৌস (২৫) নামের এক যুবক নিহতের ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ বলছে, দুপক্ষের গোলাগুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। স্বজনদের দাবি, তাঁকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার ইন্ধনদাতা স্থানীয় ইউপি সদস্য। এ ঘটনায় দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বড় মহেশখালী ইউনিয়নের ফকিরা ঘোনায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। আজ সোমবার সকালে জেলার সিনিয়র এএসপি জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ সময় হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন তাঁরা।
মো. ফেরদৌস ওই এলাকার মৃত মো. নেছারের ছেলে। আজ সোমবার দুপুরের দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, সরু সড়কের মোড়ে মোড়ে মানুষের জটলা। সবাই চুপচাপ, কেউ কথা বলতে চান না। সামনে এগোতে দেখা মেলে নিহতের চাচার বাড়ি। স্বজনেরা জানান, এখানেই হবে মরদেহের দাফন। বেলা ১২টার দিকে বাড়ির উঠোনে মরদেহের অপেক্ষায় থাকা চাচা আবদুর রহিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বললেন ঘটনার আদ্যোপান্ত।
তাঁর ভাষ্যমতে, ‘শনিবার দুপুরে লবণমাঠে পানি চলাচলকে কেন্দ্র করে পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা মো. জাবেদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় মো. ফেরদৌস ও মো. ছোয়ানের। এ ঘটনার জেরে রোববার সন্ধ্যায় আবারও ঝগড়া লাগে তাঁদের মধ্যে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু মেম্বার জিল্লুর রহমান মিন্টুর ইন্ধনে প্রতিপক্ষ বিচারে বসেনি। পরে রাত ৮টার দিকে ছোয়ানকে নতুন বাজার থেকে তুলে নিয়ে যায় জাবেদের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন দুর্বৃত্ত। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে ফেরদৌসও নিখোঁজ হন।’
আবদুর রহিম বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক পর খবর আসে ফেরদৌসের লাশ ধানখেতে পড়ে আছে। এরপর লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ছোয়ান এখনো নিখোঁজ।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রানা দে বলেন, ‘ফেরদৌসের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের পাশাপাশি পাঁচটির বেশি গুলির চিহ্ন রয়েছে।’
স্থানীয়রা বলছেন, এ ইউপি সদস্য জিল্লুর রহমান স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা। ক্ষমতা ব্যবহার করে নিয়মিত অপরাধমূলক কাজ করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য জিল্লুর রহমান মিন্টুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই আমি জড়িত নই। নিহতের স্বজনেরা অহেতুক দোষারোপ করছেন। তাঁর সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিখোঁজের ভাই আবদুল মালেক বলেন, ‘ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে তাঁদের সঙ্গে আমাদের পূর্ব শত্রুতা ছিল না।’
এদিকে, অন্যান্য অভিযুক্ত মো. জাবেদ, খাইরুল আমিন, আজম খান, ভুল, রিয়াজুল করিমের বসতবাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তাঁরা ঘরে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেছেন।
এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসি মো. আবদুল হাই বলেন, ‘নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। মামলা প্রক্রিয়াধীন। দুজনকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।’
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply